একজন নতুন পাসপোর্ট আবেদনকারীর হিসেবে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারবেন আজকের এই পোস্টে। অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম থেকে শুরু করে অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার জন্য কি কি লাগবে, অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন ফরম, পাসপোর্ট করার সময় যে যে বিষয় গুলো মাথায় রাখতে হবে এবং পাসপোর্ট আবেদন করার সময় যে সকল কাগজপত্র অবশ্যই প্রয়োজন হবে সকল কিছু জানতে পারবেন আজকের এই একটি পোস্টে। যারা নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবেন তাদের জন্য এই পোস্টটি হবে অনেক উপকারী এবং তথ্যবহুল পোস্ট।
অনেকেই আছেন যারা দালালদের সাহায্যে পাসপোর্ট বানাতে গিয়ে অনেক টাকা ক্ষতি করে থাকে। বর্তমানে দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট বানানোর দিন শেষ। দালাল ছাড়াই নিজে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা থেকে শুরু করে ১৫ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া সম্ভব। এর জন্য সামান্য কিছু পদ্ধতি বা ধাপ অনুসরণ করতে হবে। অনেকে মনে করে দালাল ছাড়া পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করলে পাসপোর্ট হাতে পেতে অনেক দেরি হয়ে যায়। এই ধারণা ভুল কারণ সরকার তাদের পাসপোর্ট এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে জানিয়ে দিয়েছে অতিরিক্ত টাকা প্রদান করার মাধ্যমে যে কেউ চাইলে ৭ দিনের মধ্যে এমনকি ২ দিনের মধ্যে ও পাসপোর্ট হাতে পাবেন। যাইহোক ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে, পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে সকল বিষয় বিস্তারিত এখানে আলোচনা করা হয়েছে।
পাসপোর্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার সময় কোন একটি বিষয় ভুল করে বসে থাকলে আপনি অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। ঘরে বসে কিভাবে সঠিক উপায়ে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে কিভাবে অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করা যায় সেই সম্পর্কে এই পোস্ট থেকে ভালোভাবে জেনে নিন না হয় বিপদে পড়বেন।
Table of Contents
ই পাসপোর্ট করার নিয়ম
পাসপোর্ট দুই ভাবে করা যায়। আপনি চাইলে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন অথবা আপনি চাইলে সরাসরি নিকস্থ পাসপোর্ট কার্যালয়ে গিয়ে পাসপোর্ট আবেদন ফরম সংগ্রহ করে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করার মাধ্যমে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার আগে আপনাকে সরকারি E Passport অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে একটি একাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে। তারপর আপনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
অনলাইনে ই পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। এরপর, ওয়েবসাইটের হোম পেজ থেকে “Directly to online application” লিংকে ক্লিক করতে হবে। ক্লিক করার পর District এবং Address দিয়ে কনফার্ম করতে হবে। এরপর, আপনাকে আপনার একটি সচল ইমেইল আইডি দিতে হবে তারপর ক্যাপচা পূরণ করে “Continue” তে ক্লিক করতে হবে। এরপর, আপনাকে কিছু Account Information দিতে হবে তারপর “Create Account” বাটনে ক্লিক করে আপনাকে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে। একাউন্ট তৈরি করা হলে এবার আপনি সরাসরি Gamil অ্যাপের মধ্যে প্রবেশ করে একাউন্ট ভেরিফাই করুন। তারপর, আবার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে Sign In বাটনে ক্লিক করে Email Address এবং Password দিয়ে Sign In বাটনে ক্লিক করুন। একাউন্ট তৈরি করা পর এখন আপনাকে অনলাইনে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে।
এতক্ষণ উপরে যে পদ্ধতি গুলো বলা হয়েছে সেটি ছিল কিভাবে epassport.gov.bd ওয়েবসাইটে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হয় সেই সম্পর্কে। আরো সহজ করে যদি বলি আপনি যদি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে। তারপর আপনি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যাইহোক, নিচে ছবি এবং ভিডিও সহ বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
সংক্ষেপে – ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম
- প্রথমে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
- প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
- ফরম পূরণ করুন যেখানে আপনাকে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য, পেশা বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে হবে।
- প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট সাবমিট করুন। এতে জাতীয় পরিচয় পত্র, ছবি, পেশা সনদ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
- অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিং বা ব্যাংকের ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে ফি পরিশোধ করুন।
- তারপর একটি নির্দিষ্ট তারিখে আপনার নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (অনলাইনে আবেদন কপি, ঠিকানার প্রমাণ, জাতীয় পরিচয়পত্র, অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র) এবং বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করতে হবে।
- তারপর বিভিন্ন ধাপ বা কার্যক্রমের মাধ্যমে আপনার পাসপোর্ট প্রস্তুত হলে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে পাসপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে।
ই পাসপোর্ট আবেদন করার নিয়ম – E Passport Application
ই পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য নিচের ধাপ গুলো অনুসরণ করুন:
ধাপ – ১: E passport অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
ই পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য সর্বপ্রথম গুগল ক্রোম ব্রাউজারে অথবা যেকোন একটি ব্রাউজারে গিয়ে সার্চ বারে সার্চ করুন epassport.gov.bd অথবা সরাসরি এই লিংকে ক্লিক করে ই পাসপোর্ট অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন।
ধাপ – ২: “Directly to online application” লিংকে ক্লিক করুন
ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনি দেখতে পাবেন Apply Online For e Passport / Re-Issue নামের নিচে একটি ছোট লিংক রয়েছে যেখানে Directly to online application লেখা থাকে। এখন আপনার কাজ হলো এই লিংকটিতে ক্লিক করা।
ধাপ – ৩: দেশ, জেলা এবং থানা নির্বাচন করুন
এখন আপনাকে Apply Online অপশন থেকে দেশ, বিভাগ এবং থানা নির্বাচন করতে হবে। তার জন্য আপনি Are You Applying From Bangladesh? এই প্রশ্নের উত্তরে “Bangladesh” সিলেক্ট করে দিন। তারপর, Select District Of Your Present Address এই প্রশ্নের উত্তরে আপনি আপনার জেলা নির্বাচন করুন। আপনার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রে যে জেলা দেওয়া হয়েছে সে অনুযায়ী জেলা নির্বাচন করুন। এরপর, Select The Police Station nearest to your Present Address এই প্রশ্নের উত্তরে আপনি আপনার নিজ থানা নির্বাচন করুন। তারপর, নিচে Continue বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ – ৪: ইমেইল অ্যাড্রেস দিন
এখন পরবর্তী পেজে আপনাকে ইমেইল এড্রেস দিতে হবে। এমন একটি ইমেইল এড্রেস দিবেন যে ইমেইল এড্রেস টি দিয়ে আগে একাউন্ট তৈরি করা হয় নি। আপনার Email Address দেওয়ার পর একটি ক্যাপচা দেখতে পাবেন সেটি পূরণ করবেন। পূরণ করা হয়ে গেলে এবার আপনি Continue বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ – ৪: পাসওয়ার্ড ও ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করুন
এখন, পরবর্তী পেজে আপনি একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দিন। একই পাসওয়ার্ড Repeat Password অপশনে দিয়ে দিন। তারপর, Personal Information এর এখানে আপনি আপনার Full Name, Given Name, Surname এবং Phone Number দিন। এরপর, একটি ক্যাপচা দেওয়া থাকবে সেটি পূরণ করে Create Account বাটনে ক্লিক করুন। Full Name দেওয়ার সময় অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র বা জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী দিতে হবে। Given Name এটি অপশনাল আপনি চাইলে দিতে পারেন। Surname অবশ্যই দিতে হবে। Given এবং Surname এগুলো ও জাতীয় পরিচয় পত্রের সাথে মিল রাখতে হবে।
ধাপ – ৫: ই মেইল ভেরিফাই করুন
এখন আপনার কাজ হলো ইমেইল ভেরিফাই করা। আপনি পাসপোর্টের ওয়েবসাইটে যে ইমেইলটি দিয়েছেন সেই জিমেইল একাউন্টে একটি ভেরিফাই লিংক পাঠানো হবে। আপনি ইমেইল অ্যাপিটিতে প্রবেশ করে একাউন্ট ভেরিফাই করে নিন। তারপর, আবার পাসপোর্ট এর ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করুন এবং উপরে ডান পাশে কর্ণারে একটি Sign In লিংক থাকবে সেখানে ক্লিক করুন। এরপর, আপনাকে আপনার ইমেইল এড্রেস এবং পাসওয়ার্ড দিতে হবে এবং ক্যাপচা পূরণ করে Sign In বাটনে ক্লিক করতে হবে। এভাবে অর্ধেক কাজ শেষ হলো এখন আপনাকে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে।
ধাপ – ৬: Apply For A New Passport বাটনে ক্লিক করুন
এখন আপনার প্রধান কাজ হলো একটি নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা। তাই আপনাকে Apply For A New Passport বাটনে ক্লিক করতে হবে।
- Passport Type: এরপর, আপনাকে Passport Type সিলেক্ট করতে হবে। আপনি যদি একজন সাধারণ ব্যক্তি হয়ে থাকেন তাহলে Ordinary Passport সিলেক্ট করুন আর আপনি যদি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে থাকেন তাহলে Official Passport সিলেক্ট করে NOC অথবা GO দিয়ে Save And Continue তে ক্লিক করুন।
- Personal Information: এখন আপনাকে কিছু পার্সোনাল তথ্য প্রদান করতে হবে। আপনি একাউন্ট তৈরি করার সময় একবার পার্সোনাল তথ্য দিয়েছেন তাই আপনি চাইলে “I Apply For Self” এ ক্লিক করতে পারেন। এতে আপনার আর আগের তথ্য গুলো দিতে হবে না। তবে আপনি যদি আপনার একটি একাউন্ট দিয়ে আপনার পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্য একাউন্ট তৈরি করেন তাহলে I Apply For Self এ ক্লিক করতে পারবেন না। তখন তাদের তথ্য অনুযায়ী পূরণ করতে হবে। আরো সহজ ভাবে বললে আপনি চাইলে আপনার একটি একাউন্ট থেকে আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য ও পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন। Personal Information এর এখানে আপনাকে Gender, Profession, Religion, Phone Number, Country Of Birth, Date Of Birth সিলেক্ট করার পর Save And Continue বাটনে ক্লিক করতে হবে। খেয়াল রাখবেন Profession বা পেশাতে আপনি যে পেশা দিবেন সে অনুযায়ী আপনাকে তথ্য বা ডকুমেন্ট সাবমিট করতে হবে। তাই আপনি যেটা করেন বা আপনার পেশা যেটা সেটা সিলেক্ট করবেন।
- Address: এবার আপনাকে আপনার কাঙ্খিত এড্রেস গুলো দিতে হবে। আপনি আপনার মতো করে অ্যাড্রেস গুলো দিয়ে দিবেন। অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের সাথে মিল রেখে দিবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে Present Address এবং Permanent Address দুটি দিতে হবে। যদি আপনার Permanent Address টি Permanent Address দুটি এক হয় তাহলে একটি ঠিক বক্স দেখবেন সেটিতে ক্লিক করলে হয়ে যাবে। আলাদা করে আর লেখার দরকার নেই। সব কিছু দেওয়ার পর আবার Save And Continue বাটনে ক্লিক করুন।
- ID Documents: এটা হলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আপনাকে খুব গুরুত্বপুর্ন সহকারে কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস গুলো সাবমিট করতে হবে। এখন যদি আপনার থেকে আগে কোন পাসপোর্ট থাকে তাহলে আপনি Yes দিবেন যদি আপনি নতুন করে পাসপোর্ট বানান তাহলে No, I don’t Have any previous Passport সিলেক্ট করবেন। যদি আপনি MRP পাসপোর্ট থেকে ই পাসপোর্ট এ আসতে চান তাহলে সেটি করতে পারবেন তার জন্য আপনাকে Yes, I Have A MRP অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর নিচে আপনি দেখতে পাবেন আপনাকে বলা হলে আপনার কি অন্য দেশের পাসপোর্ট রয়েছে যদি থাকে তাহলে সুন্দর ভাবে Yes দিয়ে দিবেন না থাকলে NO দিবেন। তারপর, আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার দিয়ে দিবেন। অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে দেখে দেখে দিবেন। তারপর, Save And Continue বাটনে ক্লিক করুন।
- Parental Information: এখন আপনাকে আপনার বাবা তথ্য এবং আপনার মায়ের তথ্য প্রদান করতে হবে। এখানে আপনাকে আপনার বাবার নাম, আপনার বাবার পেশা, আপনার বাবার জাতীয় পরিচয়পত্রের আইডি নাম্বার দিতে হবে। একই ভাবে আপনার মায়ের তথ্য গুলো প্রদান করবেন। এখানে কিছু অপশনে দেখতে পাবেন অপশনাল লেখা থাকে। যার কারণে অনেকে এই জায়গায় তথ্য গুলো প্রদান করে না। এটা না করার চেষ্টা করবেন তথ্য দেওয়ার মতো উত্তর যদি আপনার থাকে তাহলে সব পুরন করবেন। তারপর Save And Continue বাটনে ক্লিক করুন।
- Spouse Information: আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে আপনাকে Married অপশনে ক্লিক করে আপনার স্ত্রীর বা স্বামীর তথ্য গুলো দিতে যে। যেমন; আইডি নাম্বার, নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি। যদি আপনি বিবাহিত না হন তাহলে সিঙ্গেল দিয়ে দিলে হবে। তারপর Save And Continue বাটনে ক্লিক করুন।
- Emergency Contact: আবেদন করার পর পাসপোর্ট অফিস থেকে অবশ্যই একবার হলেও কল আসবে। যদি আপনার দেওয়া নাম্বার টি কোন কারণে বন্ধ থাকে তাহলে আপনি বিপদে পড়বেন বা তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে না। তাই আপনাকে একটি Emergency Contact নাম্বার দিতে হবে। সেটি আপনি আত্মীয় স্বজনের মধ্যে যে কোন একজনের নাম্বার দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে যার নাম্বার দিবেন তার নাম, অ্যাড্রেস, আইডি কার্ড নাম্বার ইত্যাদি দিতে হবে। তারপর Save And Continue বাটনে ক্লিক করুন।
- Passport Options: এখন আপনি কত পেজের পাসপোর্ট বানাতে চান সেটি আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে। আশা করি আপনি জানেন একটি পাসপোর্ট ৪৮ পেজের এবং ৬৪ পেজের হয়ে থাকে। ধরে নিলাম আপনি ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট বানাবেন এখন আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে কত বছরের জন্য একটি পাসপোর্ট বানাতে চান। সাধারণত, ৫ বছর অথবা ১০ বছরের জন্য আবেদন করা যায়। যদি ১০ বছরের জন্য বানান তাহলে ১০ সিলেক্ট করে দিন। তারপর Save And Continue বাটনে ক্লিক করুন। ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে জেনে নিন।
- Passport Delivery Options: পাসপোর্ট সাধারণত রেগুলার ডেলিভারি হয়ে থাকে। যদি আপনি চান দ্রুত পাসপোর্ট হাতে পাবেন তাহলে আপনাকে Express অপশনে ক্লিক করে হবে। আপনি যত তাড়াতাড়ি পাসপোর্ট হাতে পেতে চান আপনাকে তত বেশি টাকা প্রদান করতে হবে। তারপর Save And Continue বাটনে ক্লিক করুন।
- Information Check Korun: এখন আপনি যে সকল তথ্য পূর্বে দিয়ে আসছেন সেগুলো দেখতে পাবেন। দেখে নিবেন সকল তথ্য ঠিক আছে নাকি। যদি ঠিক থাকে তাহলে নিচে কিছু শর্ত দেখতে পাবেন সেগুলো পড়ুন এবং ঠিক বাটনে ক্লিক করুন তারপর Confirm And Process To Payment বাটনে ক্লিক করুন।
ধাপ – ৭: পেমেন্ট পরিশোধ করুন
আপনি Online এবং Offline দুটি উপায়ে পেমেন্ট পরিশোধ করতে পারবেন। সবাই বেশিরভাগ অনলাইনে পেমেন্ট পরিশোধ করে থাকেন আপনি ও চাইলে অনলাইনে বিকাশ, নগদ, রকেট ইত্যাদি মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে পেমেন্ট করতে পারেন। এছাড়া আপনি চাইলে সরাসরি নিকটস্থ ব্যাংকে গিয়ে পেমেন্ট করতে পারেন। এখন আপনি কিভাবে পেমেন্ট করবেন সেটি সিলেক্ট করুন এরপর Continue বাটনে ক্লিক করুন। এখন আপনি বিকাশ, নগদ বা কার্ড কিসের মাধ্যমে পেমেন্ট করতে চান সেটি সিলেক্ট করুন। শুধু এগুলো না আরো অনেক গুলো মাধ্যম বা অনলাইনে ব্যাংকিং রয়েছে আপনি চাইলে এগুলো ও ব্যবহার করতে পারেন। যাইহোক, আপনি কিসের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করবেন সেটা সিলেক্ট করে পেমেন্ট করে দিন। পেমেন্ট করার সাথে সাথে আপনার পেমেন্ট পেইড হয়ে যাবে। আপনি সেটা পেমেন্ট স্ট্যাটাস এ Paid দেখতে পাবেন। যদি Paid না দেখেন তাহলে মনে করবেন আপনার পেমেন্ট হয় নি। সেক্ষেত্রে কিছু সময় অপেক্ষা করবেন তবে পেজ থেকে বের হয়ে যাবেন না।
ধাপ – ৮: Download Application From বাটনে ক্লিক করুন
পেমেন্ট করার পর যদি দেখেন আপনার পেমেন্ট পেইড হয়ে গেছে তাহলে Download Application From বাটনে ক্লিক করে সেটি ডাউনলোড করে রাখুন। অবশ্যই ডাউনলোড করে নিবেন, না হলে আপনি বিপদে পারবেন কারণ আপনাকে পেমেন্ট দেখাতে হবে। যাইহোক, যদি না করেন তাহলে তেমন বেশি বিপদের সংখ্যা নেই। কারণ আপনার ফোন এসএমএস চলে যাবে এবং সেটা সার্ভারে সেভ থাকবে।
ধাপ – ৯: পাসপোর্টের চালানের কপি ডাউনলোড করুন
এখন আপনাকে সর্বশেষ চালানের কপি ডাউনলোড করতে হবে। আপনি যে অনলাইনে পেমেন্ট করেছেন সেটার জন্য আপনাকে অবশ্যই পাসপোর্টের চালানের কপি ডাউনলোড করতে হবে। তার জন্য, প্রথমে আপনাকে Online Registration Id কপি করে নিতে হবে। তারপর, উপরে Passport Fee নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন সেখানে ক্লিক করুন। এরপর, To check And download online payment Slip এই লেখার পাশে Click Here বাটনে ক্লিক করুন। তারপর, পাসপোর্ট Application Id অপশন সিলেক্ট করুন এবং Online Registration Id টা পেস্ট করুন। তারপর জমা দিন বাটনে ক্লিক করুন। তারপর, View বাটনে ক্লিক করে তারপর ডাউনলোড করে নিন।
যাইহোক, আপনি যদি এতক্ষণে এইটুকু আসতে পারেন তাহলে মনে করলাম আপনি পাসপোর্ট আবেদন করতে সক্ষম। এখন আপনার কাজ হলো Application Summary, চালান কপি ইত্যাদি ডাউনলোড করে সাথে আপনার কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন: ভোটার আইডি কার্ড, আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন এবং আপনার স্টুডেন্ট আইডি কার্ড থাকে তাহলে স্টুডেন্ট আইডি কার্ড, আপনি যদি চাকরি করে থাকেন তাহলে চাকরি আইডি কার্ড, বাবা মায়ের আইডি কার্ড, স্বামী বা স্ত্রীর আইডি কার্ড ইত্যাদি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো একসাথে সংগ্রহ করে চলে যান পাসপোর্ট অফিসে। এরপর, লাইনে দাঁড়ান এবং নিয়ম শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাগজপত্র গুলো জমা দিন তারপর ডেলিভারি স্লিপ নিয়ে বাড়ি চলে আসেন। কিছু দিন পর আপনাকে ভেরিফিকেশনে জন্য পুলিশ বা থানা থেকে কল করা হবে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুন এবং ই পাসপোর্ট এর জন্য অপেক্ষা করুন। সাধারণত ৭ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ই পাসপোর্ট ডেলিভারি সময় হয়ে থাকে।
আপনি পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার আগে পাসপোর্ট কোন অবস্থায় আছে সেটা আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে বা অনলাইন জানানো হবে। তাই E Passport Status Meaning – পাসপোর্টের কোন স্ট্যাটাস এর কি মানে সেটা আপনার জানা অনেক গুরুত্বপূর্ন।
ই পাসপোর্ট করার আগে জানা উচিত ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে এছাড়া আপনি যদি ই পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করেন তখন আপনাকে অবস্যই সঠিক তথ্য দিতে হবে। যদি এমন হয় আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য এক রকম এবং আপনার পাসপোর্টে আবেদন করার তথ্য আরেকধরনের তাহলে আপনি বিপদে পরতে পারেন
FAQ
কিভাবে পাসপোর্ট করতে হয়?
অনলাইনে বা অফলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করা যায়। অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য প্রথমে সরকারি পাসপোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তারপর একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে, পার্সোনাল তথ্য প্রদান করতে হবে, পিতা মাতার তথ্য প্রদান করতে হবে, স্বামী বা স্ত্রীর তথ্য প্রদান করতে হবে, পেমেন্ট পরিশোধ করতে হবে এবং চালান কপি ডাউনলোড করে নিতে হবে। তারপর, কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র একসাথে করে চলে যেতে হবে নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে এবং সেগুলো জমা করে বাড়ি চলে আসতে হবে। কিছু দিন পর ভেরিফিকেশনের জন্য থানা থেকে কল করা হবে তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে হবে এবং পাসপোর্ট এর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
পাসপোর্ট করা কি সহজ?
হ্যাঁ, পাসপোর্ট করা অনেক সহজ। তবে একটু ধৈর্য ধরতে হয়। পাসপোর্ট করার জন্য একজন ব্যক্তির প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্য গুলো লাগে এর বেশি কিছু প্রয়োজন হয় না। আর প্রতিটি ব্যক্তির তার ব্যক্তিগত তথ্য সম্পর্কে ভালো ধারণা রয়েছে তাই পাসপোর্ট করা বেশি কঠিন না।
পাসপোর্ট অনলাইনে নাকি অফলাইনে করা ভালো?
পাসপোর্ট অনলাইনে হয়ে থাকে। আপনি যদি দালালের মাধ্যমে করেন তাহলে দালাল ও অনলাইনে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করবে আর আপনি যদি নিজে নিজে করেন তাহলে আপনাকে ও অনলাইনে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে হবে। তবে আবেদন করার পর থেকে বাকি কাজ গুলো অফলাইনে হয়ে থাকে। যেমন; কাগজপত্র জমা দেওয়া, ভেরিফাই করা ইত্যাদি।
পাসপোর্ট কত বছর মেয়াদি করা ভালো হবে?
আপনি চাইলে আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী ৫ বছর অথবা ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট বানাতে পারেন। তবে আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের নিচে হয় তাহলে আপনাকে ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট বানাতে হবে এবং আপনার বয়স যদি ৬৫ বছরের উপর হয় সেক্ষেত্রে ও আপনাকে ৫ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট বানাতে হবে। আপনি চাইলে ও ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্ট বানাতে পারবেন না।
শেষ কথা – পাসপোর্ট আবেদন
ই পাসপোর্ট আবেদন করা আপনার কাছে কঠিন মনে হলেও এটি সত্য যে অনলাইনে পাসপোর্ট আবেদন করা অনেক বেশি সহজ। যদি আপনার অনলাইন সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকে তাহলে আপনি একজন এক্সপার্টের সাহায্য নিতে পারেন। কিন্তু ভুলেও দালালের সাহায্য নেবেন না। কারণ, দালাল বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অনেক টাকা নিয়ে নিবে যা আবেদনকারীর ক্ষতি এবং দালালদের লাভ। আপনার কাছে যদি পাসপোর্ট করার নিয়ম এখনো কঠিন মনে হয় তাহলে একজন পরিচিত এক্সপার্ট এর সাহায্য নিন যদি না পারেন তাহলে দালালের সাহায্য নিন। পাসপোর্ট অফিসে আপনার জন্য দালালরা বসে আছে। আপনার যদি পাসপোর্ট সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনি আমাকে জানাতে পারেন আমাদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য যোগাযোগ করুন পেজে যান।