ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক গুলোর মধ্যে একটি। ইসলামী ব্যাংক একটি বেসরকারি ব্যাংক হওয়ার পরেও এই ব্যাংক দেশের সেরা ব্যাংক গুলোর তালিকায় একটি। ইসলামী ব্যাংকের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে, তার মধ্যে একটি হলো ইসলামী ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের বিভিন্ন ধরনের ক্রেডিট কার্ড অফার করে থাকে। বর্তমানে ক্রেডিট কার্ড সবাই চাই এর গুরুত্ব অনেক। যাদের ক্রেডিট কার্ড রয়েছে তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে। যেমন: ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটা করলে অল্প কিছু ডিসকাউন্ট থাকে, ইন্সুরেন্স বা বীমা সুবিধা, পয়েন্ট রিয়ার্ড ইত্যাদি আরো অনেক সুযোগ সুবিধা।

এই সকল সুযোগ সুবিধার কারণে অনেকেই ক্রেডিট কার্ড নিতে চাই। তাই, যাদের ইসলামী ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে তাদের এই পোস্টে জানানো হয়েছে ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে। তাহলে জেনে নিন ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা গুলো কি কি সেই সম্পর্কে।

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

  • একাউন্ট: ইসলামী ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার জন্য সর্বপ্রথম একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
  • বয়স: ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আবেদনকারীর বয়স সাধারণত ২১ বছর থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হয়।
  • আয়ের উৎস: ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আবেদনকারীর একটি স্থায়ী আয়ের উৎস থাকতে হয়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাসিক ইনকাম নির্ধারণ করে দেই। যেমন; মাসিক আয় সর্বনিন্ম ২৫,০০০ টাকা হতে হবে। অনেকে এর চাইতে ও কম ইনকাম করার পরেও কার্ড পেয়ে থাকে। তাই ইনকামের বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেই না। তবে ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় স্থায়ী আয়ের উৎস বলতে হবে।
  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট: অনেক সময় ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য আবেদনকারীর কমপক্ষে ১ বছরের লেনদেন থাকতে হয়। অর্থাৎ, বিগত ৬ মাস বা ১ বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রয়োজন।
  • ক্রেডিট স্কোর: ক্রেডিট কার্ড দেওয়ার আগে ব্যাংক আপনার ক্রেডিট স্কোর মূল্যায়ন করবে যা আপনার পূর্বের ঋণ পরিশোধের ইতিহাস অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।
  • প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস: কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি, ইনকামের প্রমাণ পত্র, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ছবি এবং আরো অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করতে হতে পারে।

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদন করার নিয়ম

  • আবেদনপত্র সংগ্রহ: আপনার নিকটস্থ যেকোনো ইসলামী ব্যাংক গিয়ে একটি আবেদনপত্র সংগ্রহ করুন। এই আবেদন পত্র আপনি ব্যাংকের যেকোন শাখায় পাবেন। এছাড়া, ইসলামী ব্যাংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র: আবেদন পত্র সাথে নিচের উল্লেখিত কাগজপত্র গুছিয়ে নিন:
    • জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি
    • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
    • বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্র (ইউটিলিটি বিল, রেন্ট এগ্রিমেন্ট ইত্যাদি)
    • আয় প্রমাণপত্র (সর্বশেষ বেতন স্লিপ, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি)
    • চাকরির প্রমাণপত্র (চাকরির চুক্তি, অফিস আইডি কার্ড ইত্যাদি)
    • CIBIL স্কোর রিপোর্ট
  • ব্যাংকে জমা দিন: আবেদন পত্র সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুলো একসাথে নিকটস্থ ইসলামী ব্যাংকের শাখায় জমা দিন।
  • আবেদন প্রক্রিয়া: ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার সকল কাগজপত্র যাচাই বাছাই করবে।
  • অনুমোদন এবং ক্রেডিট কার্ড ইস্যু: যাচাই প্রক্রিয়া সফল হলে ইসলামী ব্যাংক আপনার ক্রেডিট কার্ড ইস্যু করবে এবং ক্রেডিট কার্ড টি আপনার ঠিকানায় পাঠানো হবে।
  • অ্যাক্টিভেশন: ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার পর তা একটিভ করতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করুন।

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা ও অসুবিধা

ক্রেডিট কার্ডের যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি অসুবিধা ও রয়েছে। যেমন; আপনার আপনার টাকা না থাকলেও আপনি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটা করতে পারবেন, তেমনি সঠিক সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে আপনার ঋণের বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

আরো জানুন: ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে?

ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা

  • কেনাকাটার সুবিধা: আপনার কোন টাকা না থাকলেও আপনি ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটা করতে পারবেন এবং সেটা পরবর্তীতে পরিশোধ করে দিতে হবে।
  • নিরাপত্তা: খুব বেশি পরিমাণে টাকা বহন করার প্রয়োজন নেই।
  • বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা: বিশ্বের সকল দেশে ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ করে, তাই দেশে বসে বিদেশের পণ্য কেনাকাটা করতে পারবেন। এছাড়া বিদেশে ভ্রমণের সময় এটি খুব সুবিধাজনক।
  • অনলাইনে পেমেন্ট: বিদ্যুৎ বিল থেকে শুরু করে অনলাইন শপিং ইত্যাদি আরো অনেক অনলাইন ভিত্তিক লেনদেন করা যায়। যেমন; আপনি চাইলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই কমার্স ওয়েবসাইট Amazon থেকে পণ্য কেনাকাটা করতে পারবেন।
  • সোশ্যাল মিডিয়ায় বুস্ট: অনেকে ফেসবুক, ইউটিউব এবং গুগল এর মতো ওয়েবসাইটে তাদের পণ্য বুস্ট করতে চাই। কিন্তু, ডলারের কারণে তা পারে না। তাদের জন্য ক্রেডিট কার্ড অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
  • রিওয়ার্ড পয়েন্ট ও ক্যাশব্যাক: অনেক ক্রেডিট কার্ড বিভিন্ন ধরনের রিওয়ার্ড পয়েন্ট, ক্যাশব্যাক, বা ডিসকাউন্ট অফার করে।
  • সাবস্ক্রিপশন ও বিল পেমেন্ট: অটোমেটিক পেমেন্ট সুবিধা।

ক্রেডিট কার্ডের অসুবিধা?

  • ঋণের ঝুঁকি: যদি আপনি সঠিক ভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার না করেন তাহলে ঋণের ঝুঁকি বেড়ে যাবে।
  • উচ্চ সুদের হার: নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিল পরিশোধ না করলে উচ্চ সুদের হার আপনাকে বহন করতে হবে।
  • ক্রেডিট স্কোর ক্ষতি: যদি সঠিক ভাবে ক্রেডিট ব্যবহার না করেন তাহলে ক্রেডিট স্কোর ক্ষতি হতে পারে এবং আপনাকে ঋণ দেওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে।
  • অতিরিক্ত খরচ: অতিরিক্ত খরচ করার অভ্যাস হয়ে যাবে। যেটা বিশ্বের বড় বড় দেশ গুলোতে দেখা যায়, যেমন; আমেরিকা, ইতালি, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, ব্রাজিল ইত্যাদি।
  • বার্ষিক ফি: অবশ্যই প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হবে।

আরো জানুন: ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা তোলার নিয়ম

ক্রেডিট কার্ডের – গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো মাথায় রাখবেন

  • ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অতিরিক্ত কেনাকাটা করবেন না, নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে কেনাকাটা করবেন।
  • ক্রেডিট কার্ড ভেঙ্গে গেলে/হারিয়ে গেলে/চুরি হয়ে গেলে সাথে সাথে ব্যাংকে যোগাযোগ করুন এবং ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন বন্ধ করুন।
  • ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে জেনে নিন।
  • ক্রেডিট কার্ডের বিল সময়মত পরিশোধ না করলে অতিরিক্ত জরিমানা হবে।
  • ক্রেডিট সম্পর্কে গুজব/বিভ্রান্ত মূলক তথ্য থেকে বিরত থাকুন।
  • সঠিকভাবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে এবং সময়মতো বিল পরিশোধ করলে ক্রেডিট স্কোর বৃদ্ধি পায়, যা ভবিষ্যতে আপনাকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

FAQ

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড কি?

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড একটি ইন্টারন্যাশনাল আর্থিক সহায়ক কার্ড যা ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রদান করা হয় এবং এটি শরীয়াহ সম্মত নীতির ভিত্তিতে কাজ করে।

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের সুদ কিভাবে নির্ধারণ করা হয়?

ইসলামী ব্যাংক সুদের পরিবর্তে ‘মার্জিন’ বা ‘শেয়ারড প্রফিট’ এর ভিত্তিতে লেনদেন করে থাকে। ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের জন্য কোনো প্রকার সুদ নয়, বরং নির্ধারিত ফি ও চার্জ প্রযোজ্য হয়।

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের আবেদন করার জন্য কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন?

সাধারণত, আবেদনকারীকে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ইনকাম এর প্রমাণপত্র, বর্তমান ঠিকানার প্রমাণপত্র, এবং চাকরির প্রমাণপত্র প্রদান করতে হয়।

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার সীমা কি?

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার সীমা ব্যক্তির আয়, ক্রেডিট স্কোর এবং ব্যাংকের নির্ধারিত নীতির ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়।

ক্রেডিট কার্ড হারিয়ে গেলে কি করতে হবে?

যদি ক্রেডিট কার্ড হারিয়ে যায় বা চুরি হয়, তাহলে সাথে সাথে ইসলামী ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিসে যোগাযোগ করতে হবে এবং কার্ড ব্লক করতে বলতে হবে।

ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বিল কিভাবে পরিশোধ করবেন?

ইসলামী ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের বিল নিকটস্থ ব্যাংক শাখায়, অনলাইনে বা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়।

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে কি কোন ধরনের ইন্সুরেন্স সুবিধা পাওয়া যায়?

হ্যাঁ, কিছু ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে রেন্টাল গাড়ি ইন্সুরেন্স, ট্রাভেল ইন্সুরেন্স বা অন্যান্য সুবিধা প্রদান করা হতে পারে। বিস্তারিত জানতে ইসলামী ব্যাংকের অফিসিয়াল শর্তাবলী চেক করা উচিত।

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে কোন ধরনের ফি আরোপ করা হয়?

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে বার্ষিক ফি, পেমেন্ট ফি, ওভার-লিমিট ফি এবং ক্যাশ অ্যাডভান্স ফি ইত্যাদি ফি থাকতে পারে। এসব ফি ক্রেডিট কার্ডের ধরন এবং ব্যাংকের নীতির উপর নির্ভর হয়ে থাকে।

ক্রেডিট কার্ডের জন্য কি মিনিমাম ইনকাম প্রয়োজন?

হ্যাঁ, সাধারণত ক্রেডিট কার্ডের জন্য আবেদনকারীকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে ইনকাম করতে হবে। যেমন: চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ইনকাম ২৫,০০০ টাকা এবং ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে ৫০,০০০ টাকা। এটি ব্যাংকের নির্ধারিত নীতির ওপর ভিত্তি করে।

ক্রেডিট কার্ডের বিল পরিশোধের সময়সীমা কেমন হয়?

সাধারণত, মাসিক বিল পরিশোধের সময়সীমা ২০ থেকে ৩০ দিন মতো হয়ে থাকে। বিলের তারিখ এবং পরিশোধের সময়সীমা কার্ডের মাসিক বিবরণীতে উল্লেখ করা থাকে।

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইন লেনদেন কি নিরাপদ?

হ্যাঁ, ইসলামী ব্যাংক গুলি সাধারণত উন্নত সিকিউরিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনে লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থেকে। তাই আপনি নিঃসন্দেহে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে কেনাকাটা করতে পারবেন। আর ক্রেডিট কার্ড মূলত অনলাইন লেনদেন এর জন্য। তবে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার সময় সাবধানে ব্যবহার করবেন।

ক্রেডিট কার্ড পরিবর্তন বা বাতিল করতে চাইলে কি করতে হবে?

ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পরিবর্তন বা বাতিল করতে চাইলে ইসলামী ব্যাংকের কাস্টমার সার্ভিসে যোগাযোগ করতে হবে অথবা নিকটস্থ ব্যাংকে যেতে হবে এবং তাদের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে।


শেষ কথা

আশা করি এই পোস্টের মাধ্যমে আপনি জেনে গেছেন ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা সম্পর্কে। ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়া তেমন কঠিন বিষয় না। তবে এটি সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে ঋণের বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আপনার যদি একটি ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট থাকে তাহলে আপনি খুব সহজে একটি ক্রেডিট কার্ড পেতে পারেন। ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার জন্য শুধুমাত্র বয়সের দিক নজর দিলে হবে না। আপনার ইনকাম সোর্স ও ভালো থাকতে হবে। সবশেষে আপনি যদি ক্রেডিট কার্ড পেয়ে যান তাহলে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকবেন এবং নিয়মিত বিল পরিশোধ করার চেষ্টা করবেন।

Leave a Comment