সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায়

সিটি ব্যাংক লোন ২০২৪ সিটি ব্যাংক লোন ক্যালকুলেটর,সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন ও সিটি ব্যাংক রেমিট্যান্স লোন সম্পর্কে আজকে আলোচনা করব। তাই আপনি যদি সিটি ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলন করতে চান তাহলে আজকের পোস্ট আপনার জন্য।

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বেসরকারি ব্যাংক গুলোর মধ্যে সিটি ব্যাংক অন্যতম। সাধারণত আমাদের দেশের অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সিটি ব্যাংকের সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি। এ কারণে সকল ঋণ গ্রহীতা সিটিব্যাংক থেকে লোন উত্তোলন করতে চায়। আপনিও নিশ্চয়ই সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিতে যাচ্ছেন। চলুন দেখে নেই, সিটি ব্যাংক লোন ২০২৪ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যবলী।

সিটি ব্যাংক লোন ২০২৪

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বেসরকারি ব্যাংক হল সিটি ব্যাংক। সিটি ব্যাংক থেকে আপনি বেশ কয়েকটি উপায় লোন উত্তোলন করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি যদি বাড়ি তৈরি করতে চান এই কারণে সিটি ব্যাংক হোম লোন রয়েছে। আবার আপনি যদি ব্যক্তিগত কাজ সম্পন্ন করতে চান সে ক্ষেত্রে সিটি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন উত্তোলন করতে পারবেন।

আবার এমন অনেক চাকরিজীবী রয়েছেন যারা কিস্তির উপরে বাইক বা গাড়ি কিনতে চায়। তাদের জন্য রয়েছে সিটি ব্যাংক কার লোন। এরকম বেশ কয়েকটি লোন আপনি সিটি ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারবেন। তবে সিটি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার আগে অবশ্যই তাদের শর্তাবলী আপনাকে পূরণ করতে হবে। চলুন দেখে নেই সিটি ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য আপনার কি কি শর্তাবলী মানতে হবে।

সিটি ব্যাংক থেকে কত ধরনের লোন পাওয়া যায়

সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে জানার আগে অবশ্যই আমাদেরকে সিটি ব্যাংক থেকে কত ধরনের লোন পাওয়া যায় এ বিষয়টি জানা অতীব জরুরি। কেননা লোনের ধরন অনুযায়ী আপনাকে নির্বাচন করতে হবে আপনার জন্য কোন লোনটি প্রয়োজন। তাছাড়া সিটি ব্যাংক লোনের প্রকারভেদ এর ভিত্তিতে সুযোগ সুবিধা ও আলাদা। কত ধরনের সিটি ব্যাংক বা কত ধরনের লোন প্রদান করে থাকে নিম্নে সেটা পয়েন্ট আকারে তুলে ধরা হলো।

  • হোম লোন
  • পার্সোনাল লোন
  • বাইক লোন
  • অটো লোন
  • প্রবাসী লোন

সিটি ব্যাংক সাধারণত এই কয় ধরনের লোন প্রদান করে থাকে। উপরে বর্ণিত খাত গুলোতে আবেদন কারিগন তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক তথ্য প্রদানের মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। তবে লোনের সুবিধাগুলো ভোগ করতে হলে অবশ্যই সিটি ব্যাংক কর্তৃক কিছু নিয়ম এবং শর্তাদি পালন করতে হবে। প্রিয় পাঠক বৃন্দ আসুন আমরা নিচে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি লোনের খাত সম্পর্কে অর্থাৎ প্রত্যেকটি সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় বা পদ্ধতি এবং কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করি।

আরো পড়ুন: জনতা ব্যাংক কি সরকারি

সিটি ব্যাংক লোন যোগ্যতা

সিটি ব্যাংক থেকে আপনি যে ধরনের লোন উত্তোলন করেন না কেন। অবশ্যই আপনাকে তাদের যোগ্যতা গুলো পূরণ করতে হবে। সিটি ব্যাংক লোন যোগ্যতা গুলোর মধ্যে রয়েছে।

  • আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। অর্থাৎ আবেদনকারীর ভোটার আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট থাকা আবশ্যিক।
  • সিটি ব্যাংক থেকে আপনি সর্বনিম্ন ১ লক্ষ টাকা থেকে সর্বোচ্চ প্রথম পর্যায়ে ২০ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে পারবেন। তবে এজন্য অবশ্যই আপনাকে ঋণ এর টাকা পরিশোধ করার মতো সম্পত্তি থাকতে হবে।
  • আবেদনকারীর সর্বোচ্চ বয়স ৬৫ বছর ও সর্বনিম্ন বয়স ২২ বছরের মধ্যে থাকতে হবে।
  • আবেদনকারী যদি চাকরিজীবী হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই চাকরির এক বছর অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

এছাড়াও ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ঋণের ক্যাটাগরির উপর আপনার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা নির্ভর করবে। এজন্য অবশ্যই আপনি সিটি ব্যাংকে অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যোগাযোগ করতে পারেন।

আরো পড়ুন: সোনালী ব্যাংক কি সরকারি

সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন পাওয়ার পদ্ধতি

সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় এর মধ্যে আরেকটি লোন হলো সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন। আপনার যদি ব্যক্তিগত কোন কাজের জন্য লোনের প্রয়োজন হয় (যে কোন ধরনের সমস্যায়) তাহলে সেটি ব্যাংক পার্সোনাল লোনের আওতায় আপনি লোন গ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারেন। সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন এর সুবিধা হচ্ছে যে কোন ব্যক্তি 5 লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন গ্রহণ করতে পারেন। উক্ত লোনের পরিশোধ করার মেয়াদ হচ্ছে বারো মাস থেকে শুরু করে ৬০ মাসের মধ্যে। সিটি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন নেওয়ার জন্য কিছু শর্ত রয়েছে সেগুলো নিচে পয়েন্ট আকারে বর্ণনা করা হলো।

  • আবেদনকারীর বয়স ২২ বছর থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
  • যে কাজের উদ্দেশ্যে সিটি ব্যাংক থেকে লোন নিচ্ছেন সেই কাজের উপর অবশ্যই কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যদি পূর্বে বিজনেস নিয়ে কাজ করে থাকেন তাহলে সেই বিজনেসের উপর কমপক্ষে তিন বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
  • যদি কোন কোম্পানি আওতায় কাজ করেন তাহলে বেতনের কমপক্ষে ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট লাগবে।
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি।
  • আগ্রহী ব্যক্তির তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • জামিনদারের পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • ব্যবসায়ী কার্ড/ অফিস আইডি কার্ডের ফটোকপি।
  • পূর্বে ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট অথবা ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে এক বছরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হবে এবং ট্রেড লাইসেন্স লাগবে।

সাধারণত সিটি ব্যাংক পার্সোনাল লোন পাওয়ার জন্য উক্ত শাখার কর্মচারী কর্তৃক দেওয়া ফর্মের সাথে উপরে বর্ণিত কাগজপত্র গুলো জমা দিলে এবং সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেলে আপনি লোনের আওতাভুক্ত হবেন।

সিটি ব্যাংক অনলাইন লোন

সিটি ব্যাংক অনলাইন লোন পাওয়ার জন্য আপনাকে সর্বোত্তম গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে “CITY TOUCH” নামক অ্যাপটি ডাউনলোড করে ইন্সটল করতে হবে। তারপর অ্যাপ এ ঢুকে নিচের অংশে ডানদিকে একটি “MORE “ নামক অপশন রয়েছে সেটিতে ক্লিক করতে হবে। এই পর্যায়ে এসে “Loan Service” লেখাটিতে ক্লিক করতে হবে। তারপর পরের ধাপে “Apply For Quick Loan” এই অপশনে ক্লিক করতে হবে। এখানে এখন আপনাকে আপনার একাউন্টটি সিলেক্ট করতে হবে। সেজন্য “Select FD Account” এই অপশনে ক্লিক করে আপনার একাউন্টটি সিলেক্ট করে দিবেন।

এখন আপনি কত মাসের জন্য লোন নিতে চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করতে হবে। আর সেজন্য “Select Loan TENURE (MONTHS) এই অপশনে গিয়ে কত মাসের জন্য লোন চাচ্ছেন সেটি সিলেক্ট করবেন। এরপর কত টাকা ঋণ চাচ্ছেন সেটি উল্লেখ করতে হবে। আর সেজন্য “SELECT AMOUNT (BDT) এই অপশনে গিয়ে ঋণের পরিমাণ উল্লেখ করতে হবে। এখন ‘MONTHLY INCOME” এই অপশানে গিয়ে আপনার মাসিক ইনকাম বসিয়ে দিবেন এবং “eTIN” নাম্বার থাকলে দিবেন। না থাকলে দেওয়ার দরকার নাই। এ পর্যায়ে এসে “SELECT BRANCH” এই অপশনে গিয়ে আপনার নিকটস্থ সিটি ব্যাংক শাখা সিলেক্ট করুন।

“SELECT PROFESSION” এ গিয়ে আপনার পেশা সম্পর্কে জানান আপনার একটি সচল মোবাইল নম্বর দিন। এবং “NEXT” অপশনে ক্লিক করুন। একটু পর আপনার ফোনে SMS এর মাধ্যমে একটি “OTP” কোড পাঠানো হবে। এরপর “OTP” টি বসিয়ে দিন এবং “SUBMIT” বাটনে ক্লিক করুন। আপনার আবেদনের কাজটি সম্পন্ন হল এখন তিন দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষ আপনাকে জানাবে। আপনি ঋণ পাবেন কিনা যদি আপনার তথ্যগুলো সঠিক হয় তাহলে অবশ্যই আপনি ঋণের আওতাভুক্ত হবেন।

কিন্তু সিটি ব্যাংক অনলাইন লোন পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে আগে “CITY TOUCH” এর আওতায় রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। সেজন্য আগে উক্ত শাখার কর্মচারীর সাথে কথা বলে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করবেন। না হলে আপনি কোন প্রকার অনলাইন ঋণ এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না।

প্রিয় পাঠক, আমরা এতক্ষন সিটি ব্যাংক লোন পাওয়ার উপায় এবং সিটি ব্যাংক অনলাইন লোন পদ্ধতি সহ বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আসুন এবার জেনে নিই সেটি ব্যাংক লোনের সুদের হার কত।

আরো পড়ুন: ইসলামী ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড পাওয়ার যোগ্যতা

সিটি ব্যাংক লোন সুদের হার

আমাদের দেশের অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় সিটি ব্যাংকের সুদের হার একটু কম। সিটি ব্যাংক থেকে পার্সোনাল লোন উত্তোলন করলে আপনি সুদের হার পাচ্ছেন সর্বনিম্ন ৯%। এছাড়াও সিটি ব্যাংকের সুদের হার সর্বোচ্চ ১২%।

সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন

সাম্প্রতিক সময়ে সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন নামক একটি লোন সেবা চালু করেছে। এজন্য অবশ্যই আপনাকে একজন বিকাশ গ্রাহক হতে হবে। বিকাশ থেকে আপনি সিটি ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ 20000 টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। তবে এজন্য অবশ্যই আপনার বিকাশ একাউন্ট অনেক পুরনো হতে হবে। এর পাশাপাশি বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে টাকা আদান-প্রদান করতে হবে। তাহলে আপনি সিটি ব্যাংক বিকাশ লোন উপভোগ করতে পারবেন।

শেষ কথা

সিটি ব্যাংক লোন ২০২৪ সম্পর্কে আপনি সঠিক তথ্য পেয়েছেন। আমরা সব সময় চেষ্টা করি আপনাদের সামনে সঠিক ও সত্য তথ্য তুলে ধরার। এছাড়াও ব্যাংকিং বিষয়টি যদি কোন সহযোগিতা দরকার হয়ে থাকে। তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এছাড়াও সিটি ব্যাংক লোন সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য অবশ্যই তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ভিজিট করবেন।

Leave a Comment